গ্রাফিক কার্ড
কম্পিউটারের যন্ত্রাংশের মধ্যে প্রসেসরের পরেই একটি অন্যতম যন্ত্রাংশ হল জিপিইউ বা গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট বা গ্রাফিক কার্ড। গেমিং অথবা যে কোন ধরনের গ্রাফিক্সের কাজে এটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ একটি যন্ত্রাংশ। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন দোকানে গিয়েই যে কোন একটি গ্রাফিক্স কার্ড কিনে ফেলি এবং পরে এসে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই।
আজকের লেখাটি হল কি কি দেখে গ্রাফিক্স কার্ড কিনবেন? হোক সেটি নতুন অথবা সেকেন্ড হ্যান্ড।
১। সিপিউ অনুযায়ী জিপিইউঃ গ্রাফিক্স কার্ড পছন্দ করার আগে দেখে নিন আপনার সিপিউ সেই গ্রাফিক্স কার্ডটিকে সাপোর্ট দিতে পারবে কিনা? না হলে সিস্টেম বটলনেক হতে পারে। বটলনেকের কারনে আপনি যে পার্ফামেন্স আশা করছেন তা পাবেন না। বটলনেকের ব্যাপারে অন্য একদিন লেখা হবে।
যাইহোক সিপিউ এবং জিপিউ এর মধ্যে সমতা করে কিনা উচিত।
২। গ্রাফিক্স কার্ডের আকারঃ ধরুন, আপনার কেস মিনি আইটিএক্স যাতে ৩ টি ফ্যানের জিপিউ সাপোর্ট করবে না। বাসায় নিয়ে এসে দেখছেন কম্পিউটার কেসে আটছে না। সুতরাং জিপিইউ কিনার ক্ষেত্রে দেখে নিবেন আপনার কেসে এটি সুন্দরভাবে আটবে কিনা যাতে জিপিইউ যথেস্ট এয়ারফ্লো পেয়ে থাকে।
৩। গিগাবাইটই সবকিছু নয়ঃ আমাদের মধ্যে অনেকেরই ভুল ধারনা এই যে এক্সটার্নাল গ্রাফিক্স কার্ডের গিগাবাইট যত বেশি সেটি তত ভালো। আসলে এই ধারনাটা একদমই সঠিক নয়। গ্রাফিক্স কার্ডের ভির্যাম বেশি থাকাটা ভালো কিন্তু এই ব্যাপারটা কখনোই জিপিইউ এর আসল ক্ষমতা প্রকাশ করে না। এক্ষেত্রে জিপিইউ এর মডেলই এর পার্ফামেন্স নির্দেশ করে থাকে। এনভিডিয়ার ক্ষেত্রে GT>GTX>RTX মডেল সিরিজ যেখানে ১০৩০ থেকে ২০৮০ পর্যন্ত মডেল আছে। একদমই লো বাজেট কার্ডগুলোর মডেলের শেষে ১০,৩০ থাকে।
অন্যদিকে সর্বোচ্চ মডেলের জিপিউ গুলো ৭০,৮০ বা ৮০টিআই হয়ে থাকে। এএমডির ক্ষেত্রে, RX সিরিজের কার্ডগুলো ৫৫০ থেকে ৫৮০ পর্যন্ত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ৫৫০ একদমই লো বাজেট কার্ড এবং ৫৮০ মিড বাজেট কার্ড। ব্যাতিক্রম হল এর রেডিওন এক্সটি কার্ডগুলো।
৪। গ্রাফিক্স কার্ডের মডেল এবং ভ্যারিয়েন্টঃ এনভিডিয়া বা এএমডি জিপিইউ টেকনলজি প্রস্তুত করলেও বাজারে জিপিইউ প্রস্তুতকারী অনেক কোম্পানি বা ব্র্যান্ড রয়েছে। এদের মধ্যেও আবার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট আছে। যেমন- ASUS এর মধ্যেই ROG STRIX,TUF,DUAL,TURBO এই ভার্শন আছে। তাই দেখে নিন কোনটি আপনার কাজের কিংবা গেমিং এর জন্য ভাল হবে।
৫। কুডা কোর নাকি স্ট্রিম প্রসেসরঃ এই ব্যাপারটা খুবই বিতর্কের। কারন কুডা কোর হল এনভিডিয়ার প্রসেসিং ইউনিট অন্যদিকে স্ট্রিম প্রসেসর হল এএমডি এর প্রসেসিং ইউনিট টেকনলজি। তবে এখন বিতর্কে না গিয়ে জিপিইউ পছন্দ করার সিদ্ধান্তটা আপনার। আপনি আপনার কাজ বা গেমিং এর চাহিদার ভিত্তিতে গ্রাফিক্স কার্ড কিনবেন।
৬। পাওয়ার কন্সাম্পশান এবং পাওয়ার সাপ্লাইঃ গুরুত্বপুর্ন একটি বিষয় এটি। কারন একটি ভাল মানের জিপিইউকে সবসময় চালু রাখতে প্রয়োজন একটি ভালো মানের পাওয়ার সাপ্লাই। এক্ষেত্রে জিপিইউ এর পাওয়ার সাপ্লাই রেকমেন্ডেশন এবং জিপিইউটি কত পাওয়ার খরচ করে তা দেখে কিনা উচিত। নন ব্র্যান্ড পাওয়ার সাপ্লাইগুলো ভালো মানের জিপিইউকে চালাতে পারে না এছাড়াও জিপিইউ এর ক্ষতি হবার সম্ভাবনাও থাকে। তাই অবশ্যই জিপিউ কিনার পর এর জন্য একটি ভালো মানের পাওয়ার সাপ্লাই নিতে হবে যদি না থেকে থাকে।
৭। বাজেটঃ সবকিছু ঠিকঠাক করার পর দেখছেন জিপিইউ এর দামটা বেশি। তাই এক্ষেত্রে আপনার বাজেট একটি গুরুত্বপুর্ন ব্যাপার। বাজেটে না হলে সেক্ষেত্রে আপনাকে বাজেট অনুযায়ী জিপিউ পছন্দ করতে হবে।